৫টি উপায়ে জ্যোতির্বিজ্ঞানে দক্ষ হয়ে উঠুন

  • Home
  • ৫টি উপায়ে জ্যোতির্বিজ্ঞানে দক্ষ হয়ে উঠুন
Shape Image One
৫টি উপায়ে জ্যোতির্বিজ্ঞানে দক্ষ হয়ে উঠুন

জ্যোতির্বিজ্ঞানের প্রতি ঝোঁকটি কিন্তু খুব ছোটোবেলায় যখন আমাদের বাবা-মা আমাদেরকে রাতের আকাশের দিকে তাক করে তাঁরা দেখাতেন তখন থেকেই। আমার মনে হয় সবাই কমবেশি আমার সাথে এই বিষয়টিটে একমত হবেন। এরপর জ্যোতির্বিজ্ঞানের সাথে আমাদের পরিচয় করিয়ে দেয় কে? মনে আছে আপনাদের? ডিস্কাভারি চ্যানেল কিংবা ন্যাশনাল জিওগ্রাফিক চ্যানেলে স্টিফেন হকিং এর ডকুমেন্টারি শো কিংবা মহাকাশ বিষয়ক অনুষ্ঠানগুলো থেকে কিন্তু আমাদের সাথে মহাজাগতিক জগতের সাথে একটি ভালো বন্ধুত্ব হয়। অন্ততপক্ষে আমার সাথে শৈশবকালে এটি ঘটেছে। জানিনা আপনাদের কাদের সাথে এমন বন্ধুত্বের সম্পর্ক গড়ে উঠেছে। যাইহোক, এরপর ধীরে ধীরে বড় হলাম আমরা আর জ্যোতির্বিজ্ঞান শেখার শখ আরো বেড়ে উঠে কিন্তু এই কি মুশকিলের কথা? কোথাও যে শেখার মতো বাংলায় কোনো রিসোর্স পাচ্ছিনা। যাইহোক গুগলের মাধ্যমে টুকিটাকি শেখা হয়তো হলো। এই ছিলো আগের জেনারেশনের কথা।

কিন্তু এখনকার জেনারেশন কিন্তু খুবই ভাগ্যবান কারণ এখন তাঁরা দেশের যেকোনো প্রান্ত থেকে যেকোনো সময় জ্যোতির্বিজ্ঞান শিখতে পারছে তাও নিজ মাতৃভাষায়। এসব অসম্ভবকে সম্ভব করার প্রয়াসেই কিন্তু দিন-রাত কাজ করে যাচ্ছে আপনাদের প্রিয় “Astronomy Pathshala.”

এখন শেখার মধ্যে কিন্তু আবার দুটি ধরণ রয়েছে। কেউ শিখে শখের বসে, কেউ শিখে ক্যারিয়ার হিসেবে গ্রহণ করার জন্য। অনেকে প্রশ্ন করে থাকে আমাকে যে, “ভাইয়া, আমিতো একদম নতুন কিছুই জানিনা। কিভাবে কি করবো? বুঝতেসিনা।“ এইযে যারা একদম নতুন, কিছুই বুঝতেসেন না কিভাবে শিখবেন বা কি করবেন তাঁদের জন্যই মূলত আজকে আমার এই লিখাটি। আজকে আমি আপনাদেরকে ৫টি হ্যাকস বলে দিবো যেগুলোর মাধ্যমে প্রথমে যখন জ্যোতির্বিজ্ঞান চর্চা শুরু করবেন তখন আপনাদের অনেক দূরের পথে এগোতে সাহায্য করবে। শুধু বই-পুস্তকের জ্ঞান থাকলে চলবেনা, তাঁর সাথে প্রয়োজন আরো কিছু মানসিক প্রস্তুতি যা আজকের লিখাতে বিস্তারিত বলার চেষ্টা করবো।

১। পদার্থবিজ্ঞান এবং গণিতের প্রাথমিক বিষয়গুলো জানাঃ

আমরা নবম-দশম শ্রেণী থেকেই কিন্তু একাডেমিকালি পদার্থবিজ্ঞান পড়ার শুরু করে থাকি। অনেকে আছে যারা খুব ছোটোবেলা থেকেই পদার্থবিজ্ঞান নিয়ে নাড়াচাড়া করে থাকে। আর ম্যাথ ত সেই ছোটোবেলা থেকেই আমরা করে আসতেসি। এখন জ্যোতির্বিজ্ঞানের এদের কি সম্পর্ক অনেকে প্রশ্ন করতে পারেন যারা জানেন না। পদার্থবিজ্ঞান আর গণিতের উপরেই মূলত জ্যোতির্বিজ্ঞানের স্তম্ভ দাঁড়িয়ে আছে। এছাড়া আরো নানা জিনিসপাতি আছে কিন্তু মূল বেসিক বীষয়ের মধ্যে এই দুটির জ্ঞান থাকা অত্যাবশ্যক। তাই শুরু থেকেই যদি আমরা পদার্থবিজ্ঞান আর গণিতের বেসিক বিষয়গুলোতে দক্ষ হতে পারি তবে জ্যোতির্বিজ্ঞানের উচ্চ স্তরে গেলে আমরা আরো নতুন কিছু শেখার গতি পাবো।

২। অন্তত একটি প্রোগ্রামিং ভাষার আয়ত্ত্ব থাকতে হবেঃ

একটু আগেই কিন্তু বললাম আপনাদেরকে যে শুধু পদার্থবিজ্ঞান আর গণিতের জ্ঞানের বাইরেও আরো অনেক কিছু জানা থাকা লাগবে তাঁর মধ্যে হচ্ছে এই একটি। যেকোনো একটি প্রোগ্রামিং ভাষা জানা থাকাটা ফরজ। কারণ বর্তমান জ্যোতির্বিজ্ঞান এবং তাঁর গবেষনা কিন্তু পুরোটাই ডিজিটাল পৃথিবীর উপর নির্ভরশীল। তথ্য প্রযুক্তির এই যুগে সব কিছু এখন অটোমেটেড এবং কম্পিউটারাইজড। আর তাই যারা মুলত অবজারভেশনাল জ্যোতির্বিজ্ঞানে কাজ করতে চান অর্থাৎ যারা মহাকাশের ডেটা নিয়ে, সিগনাল নিয়ে নাড়াচাড়া করতে চান তাঁদের তো একটি প্রোগ্রামিং ভাষা জানা ফরজের চেয়েও বেশি কিছু কারণ এই অবজারভেশনাল ফিল্ডে প্রোগ্রামিং ছাড়া এখন কোনো কাজ করাই সম্ভব নয়। এখন অনেকে প্রশ্ন করবেন যে কোন প্রোগ্রামিং ভাষাটি শিখবো? জ্যোতির্বিজ্ঞানে সবচেয়ে বেশি যেই প্রোগ্রামিং ভাষাটি ব্যবহৃত হয় তাহচ্ছে “Python.” অন্ততপক্ষে পাইথন এবং পাইথনের স্পেসিফিক কিছু প্যাকেজ সম্পর্কে জানা থাকলে আপনি জ্যোতির্বিজ্ঞানের বহু পথ পাড়ি দিতে পারবেন। বাকি বিস্তারিত আলাপ না হয় অন্য আরেকদিন আরেকটি লিখাতে করবো।

৩। প্রবলেম সল্ভিং স্কিল বাড়াতে হবেঃ

অন্যান্য সব স্কিলের মতো এই স্কিল থাকাটা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। কারণ বর্তমান দুনিয়াতে সমস্ত কাজেই এই প্রব্লেম সল্ভিং স্কিলের প্রয়োজন হয়। অ্যাস্ট্রোনমি কিংবা জ্যোতির্বিজ্ঞানে যেহেতু নানা রকমের সমস্যার সমাধান করতে হয় তাই এই স্কিলটি থাকাটা অত্যন্ত জরুরি। তাই এখন থেকেই যদি এই স্কিলটিকে আয়ত্ত্বে আনা যায় তাহলে ভবিষ্যতে যখন আপনি জ্যোতির্বিজ্ঞানের উচ্চতর বিষয়ে কাজ করতে যাবেন সেটি আপনার জন্য অনেক সহজ হবে। আর গবেষকরা যখন কোনো কিছু নিয়ে গবেষণা করেন সেখানেও এই স্কিলটি কিন্তু কাজে লাগে কারণ যেহেতু একটি অজানা বিষয়ের রহস্যকে খুঁজে বের করার চেষ্টা করছেন সেখানে অবশ্যই নানা রকমের সমস্যার উদয় ঘটবে আর সেগুলো মোকাবেলা করার জন্য যদি আপনার প্রবলেম সল্ভিং স্কিলটি না থাকে তাহলে কিন্তু ভয়াবহ বিপদ।

৪। প্রচুর ধৈর্যশীল হতে হবেঃ

আমরা অনেকে আছি অল্পতেই হার মেনে নেই কিংবা এসেই গরম ভাত খেতে চাই। শুধু জ্যোতির্বিজ্ঞান নয় যেকোনো সেক্টরে আপনার সহজেই সাফল্য আসবে না। আপনি গবেষক হন, উদ্যোক্তা, ডাক্তার, ইঞ্জিনিয়ার, ব্যবসায়ী যাই হতে চান না কেনো অল্পতে যেমন সাফল্য আসবে না তেমনি কঠোর পরিশ্রম ছাড়াও সেই সাফল্য দেখা দিবে না। অনেকে আছে যারা কিছুদিন কাজ করেই হায়হুতাশ শুরু করে আমার এটা হচ্ছে না কেনো? অন্যরা সাকসেস পাচ্ছে আমি পাচ্ছি না কেনো? আপনি হয়তো কোনো একটি ডেটা সেট নিয়ে কাজ করছেন সেই ডেটা সেট এতো বড় ফাইল কেনো ইত্যাদি নানা রকমের হায়হুতাশ করে থাকে যা দিন শেষে কোনো আউটপুট আপনাকে তো দিবেই না বরং আপনি আরো মানসিকভাবে ভেঙ্গে পরবেন এবং পরিশ্রম করার মতো উদ্যোম এবং শক্তি সব হাওয়া হয়ে যাবে। তেমনি জ্যোতির্বিজ্ঞানে কাজ করা এতো সহজ কাজ নয়। বিজ্ঞানীরা দিনের পর দিন, মাসের পর মাস এমনকি বছরের পর বছর একটি বিষয়ের সমস্যার সমাধান নিয়ে কাজ করে থাকেন। কখন তাঁরা সাফল্যের মুখ দেখে কখনো বা দেখে না। হতাশ না হয়ে আবারো পুর্ণ উদ্যোমে চেষ্টা চালিয়ে যায়।

আমরা অনেকেই কিন্তু ইলন মাস্কের রকেট উৎক্ষেপণের ব্যর্থতার কথা জানি। সে হাল না ছেড়ে বরং প্রচুর পরিমাণে ধৈর্য ধরে চেষ্টা চালিয়ে যাওয়ার পরেই কিন্তু প্রতিটি সাফল্য তাঁর ঝুড়িতে এসে পরেছে। তাই যারা জ্যোতির্বিজ্ঞান নিয়ে পড়াশোনা কিংবা গবেষণা যাই ক্রতে চান না কেনো আপনাকে অবশ্যই প্রচুর পরিমাণে ধৈর্যশীল হতে হবে।

৫। জ্যোতির্বিজ্ঞানের প্রতি ভালোবাসা এবং কঠোর পরিশ্রম চালানোঃ

যেকোনো কাজেই আসলে কাজের প্রতি কিংবা যেই বিষয়ে কাজ করছেন সেই বিষয়ের প্রতি ভালোবাসা থাকাটা আবশ্যক। কারণ যেই কাজের প্রতি আপনার ভালোবাসা থাকবে না সেই কাজে কঠোর পরিশ্রম করার মন-মানসিকতাও আপনার তৈরী হবে না।

আজকাল একটা কমন ডায়লগ আছে না,

“জোর করে ভালোবাসা যায় না”

কথাটি হাস্যকর শুনালেও কিছু কিছু ক্ষেত্রে আসলেই একদম সত্য। তেমনিভাবে জ্যোতির্বিজ্ঞান চর্চা হোক কিংবা গবেষণা আপনার যদি এই কাজের প্রতি ভালোবাসা, শ্রদ্ধা না থাকে মোটকথা প্যাশন না থাকে আপনি সেই কাজে ভালো আউটপুট যেমন পাবেন না তেমনি কাজটি করে আনন্দ পাওয়ার বদলে আপনি হতাশাগ্রস্থ হয়ে পড়বেন কিংবা কাজটি আপনার কাছে বিরক্তিকর বলে মনে হবে। তাই জ্যোতির্বিজ্ঞানের প্রতি ভালোবাসা থাকলেই কঠোর পরিশ্রম করার মনোভাব গরে উঠবে এবং আপনি পাবেন যথাযথ ফলাফল।

এই ৫টি হ্যাকস যদি ফলো করেন তাহলে জ্যোতির্বিজ্ঞানে একদম বিগিনার থেকে ধীরে ধীরে কঠোর পরিশ্রম আর আপনার প্যাশনের ফলে আপনিও জ্যোতির্বিজ্ঞানে হয়ে উঠবেন একজন দক্ষ ব্যক্তি কারণ শুরুতে এই ৫টি ধাপ আপনাকে পাড়ি দিতে সাহায্য করবে আরো দূর মহাকাশের পথে।

আর হ্যাঁ, যারা জ্যোতির্বিজ্ঞানে একদমই নতুন এবং শিখে ফেলতে চান জ্যোতির্বিজ্ঞানের বেসিক বিষয়গুলো তাও যেকোনো জায়গা থেকে যেকোনো সময় তাঁরা দ্রুত নিচের লিংকটিতে ক্লিক করে জয়েন করে ফেলুন আমাদের ক্র্যাশ কোর্সটিতে।

1 Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

error: Content is protected !!